হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ‘ঠাটারি’ পেশা

নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী ক্ষুদ্র একটি ‘ঠাটারি’ (তৈজসপত্র মেরামতকারী) পেশা। এক সময় কামার শিল্পের আদলে গড়ে উঠা গৃহস্থালি নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য জিনিসপত্র মেরামতের ঠাটারি কারিগরদের কদর ছিল ব্যাপক। এসব কারিগর গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে  রাস্তার মোড়ে বসে ভাতির হাওয়ায় আর টুংটাং শব্দে মেরামত করত গৃহস্থালি পরিবারের ব্যবহার্য পুরনো হাড়ি, পাতিল, বালতি, জগ। এ পেশায় সম্পৃক্ত থেকে অনেকে সংসারও চালাত। এখন পুরনো তৈজসপত্র মেরামতের কারিগররদের অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।

 

এক সময় মানুষ টিনের প্লেট, পাতিল, হারিকেন, বাতিসহ কতকিছুই জোড়াতালি দিয়ে চালাতেন। টিনের প্লেট ‘ফুটা’ (ছিদ্র) হলে মানুষ সেসব মেরামত করিয়ে নিতেন। অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল, জগ বা টিনের বালতি নষ্ট হলে মেরামত করে নিতেন। হরেক রকম বালতি, সিসা সবই থাকত ঠাটারি শিল্পীদের কাছে। হাতুড়িসহ কিছু ভাঙা বালতি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরতো তারা। এখন সংসারের জিনিসপত্র বদলে গেছে। ফলে ঠাঁটারি শিল্পীদের প্রয়োজনীয়তা কেউ অনুভব করে না। করলেও হাতের কাছে আর পাওয়া যায় না। তাই কালের বির্বতনে হারিয়ে যাচ্ছে এই পেশাটি।

 

কিশোরগঞ্চ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মুশা হাজিপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‌‘অন্য কাজও জানি না। বাধ্য হয়ে ৪০ বছর ধবারে কোনো রকমে এ পেশায় চলছে জীবিকা। হাট-বাজারসহ গ্রামে গ্রামে ঘুরে তৈজসপত্র মেরামত করি। এক সময় আয় রোজগারও ভাল ছিল। তবে সেই সব দিন আজ শুধুই স্মৃতি।’

 

নীলফামারী উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আবু মুসা মাহামুদুর হক বলেন, ‘এক সময় ঠাটারি পেশা খুবই পরিচিত ছিল। ঠাটারি বলে পরিচিত শিল্পীরা বালতি, গামলা, হাড়ি, পাতিল, জগ ইত্যাদি ব্যবহার করা সামগ্রী মেরামত করার কাজে গ্রামে গ্রামে অথবা পাড়ায় পাড়ায় হকারের মতো ঘুরে বেড়াত এবং এভাবেই জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে মানুষের জীবনযাত্রা বদলের সঙ্গে সঙ্গে পেশাটিও আজ বিলুপ্ত হচ্ছে।’ সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ৫০ লাখ নারী প্রধানের নামে হবে ‘ফ্যামিলি কার্ড’: তারেক রহমান

» জামায়াত আমিরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন প্রধান উপদেষ্টা

» উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাবে একমত এনসিপি

» প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৬তম সভা অনুষ্ঠিত

» জাতি গঠনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৌশলগত নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ: সেনাপ্রধান

» কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচনের ঘোষণা আসবে: আইন উপদেষ্টা

» বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য কয়েকটি দল নির্বাচনকে বানচাল করার  চেষ্টা করছে: খায়রুল কবির খোকন

» এ বছর ২৬ জন বাংলাদেশি পেলেন কমনওয়েলথ বৃত্তি

» বান্দরবানে লাল ব্রিজের আগে বিদ্যুতের তার কুটির রাস্তা ছুঁই ছুঁই, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

» বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটি অনুমোদন 

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ‘ঠাটারি’ পেশা

নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী ক্ষুদ্র একটি ‘ঠাটারি’ (তৈজসপত্র মেরামতকারী) পেশা। এক সময় কামার শিল্পের আদলে গড়ে উঠা গৃহস্থালি নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য জিনিসপত্র মেরামতের ঠাটারি কারিগরদের কদর ছিল ব্যাপক। এসব কারিগর গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে  রাস্তার মোড়ে বসে ভাতির হাওয়ায় আর টুংটাং শব্দে মেরামত করত গৃহস্থালি পরিবারের ব্যবহার্য পুরনো হাড়ি, পাতিল, বালতি, জগ। এ পেশায় সম্পৃক্ত থেকে অনেকে সংসারও চালাত। এখন পুরনো তৈজসপত্র মেরামতের কারিগররদের অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।

 

এক সময় মানুষ টিনের প্লেট, পাতিল, হারিকেন, বাতিসহ কতকিছুই জোড়াতালি দিয়ে চালাতেন। টিনের প্লেট ‘ফুটা’ (ছিদ্র) হলে মানুষ সেসব মেরামত করিয়ে নিতেন। অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল, জগ বা টিনের বালতি নষ্ট হলে মেরামত করে নিতেন। হরেক রকম বালতি, সিসা সবই থাকত ঠাটারি শিল্পীদের কাছে। হাতুড়িসহ কিছু ভাঙা বালতি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরতো তারা। এখন সংসারের জিনিসপত্র বদলে গেছে। ফলে ঠাঁটারি শিল্পীদের প্রয়োজনীয়তা কেউ অনুভব করে না। করলেও হাতের কাছে আর পাওয়া যায় না। তাই কালের বির্বতনে হারিয়ে যাচ্ছে এই পেশাটি।

 

কিশোরগঞ্চ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মুশা হাজিপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‌‘অন্য কাজও জানি না। বাধ্য হয়ে ৪০ বছর ধবারে কোনো রকমে এ পেশায় চলছে জীবিকা। হাট-বাজারসহ গ্রামে গ্রামে ঘুরে তৈজসপত্র মেরামত করি। এক সময় আয় রোজগারও ভাল ছিল। তবে সেই সব দিন আজ শুধুই স্মৃতি।’

 

নীলফামারী উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আবু মুসা মাহামুদুর হক বলেন, ‘এক সময় ঠাটারি পেশা খুবই পরিচিত ছিল। ঠাটারি বলে পরিচিত শিল্পীরা বালতি, গামলা, হাড়ি, পাতিল, জগ ইত্যাদি ব্যবহার করা সামগ্রী মেরামত করার কাজে গ্রামে গ্রামে অথবা পাড়ায় পাড়ায় হকারের মতো ঘুরে বেড়াত এবং এভাবেই জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে মানুষের জীবনযাত্রা বদলের সঙ্গে সঙ্গে পেশাটিও আজ বিলুপ্ত হচ্ছে।’ সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com